Dhaka.
কেন গুগল একটি ওয়েবসাইটকে পেনাল্টি দেয়?
প্রতিটি ওয়েবসাইটের জন্য সবচেয়ে বড় দুঃসংবাদ হলো ওয়েবসাইটি গুগল এর পেনাল্টির মধ্যে পড়া। কোন কারণে একটি ওয়েবসাইট গুগল পেনাল্টিতে পরে গেলে তখন ওয়েবসাইট সার্চ রেজাল্টে আর পাওয়া যায় না। যার ফলে ঐ ওয়েবসাইটির প্রচুর পরিমান ভিজিটর হাঁড়াতে শুরু করে। তাই সর্বদাই সতর্ক থাকতে হয় যেন কোন ভাবেই ওয়েবসাইট পেনাল্টির মধ্যে না পরে।
গুগল হল পৃথবীর সবচেয়ে বড় সার্চ ইঞ্জিন। গুগল ব্যবহারকারী গুগলকে বিশ্বাস করে যে গুগলে কোন কিছু সার্চ করলে তার প্রাসঙ্গিক তথ্য আসবে এবং মান সম্পন্ন বিষয়গুলো পাওয়া যাবে। গুগল সেই বিশ্বাসকে মূল্য দিয়ে তার সার্চ রেজাল্টে এমন ভালো ভালো ওয়েবসাইট গুলোই সার্চ এর প্রথম পেজে আনে যাতে ব্যবহারকারী সন্তুষ্ট হয়। সে জন্য গুগলে সার্চ রেজাল্টে র্যারঙ্ক করার জন্য গুগল এর কিছু নীতিমালা রয়েছে। যেই নিতিমালা গুলো মানলেই গুগল ওয়েবসাইট র্যা্ঙ্ক করে। আর না মানলে গুগল এর পেনাল্টি তে পড়তে হয়।
গুগল পেনাল্টি দেয়ার উল্লেখযোগ্য কারনগুলো হলোঃ
১. ব্যাকলিঙ্ক কেনাঃ
আমরা সবাই জানি ওয়েবসাইট র্যা ঙ্কিং এর জন্য ব্যাকলিঙ্ক কতটা গুরুত্বপূর্ন। সে জন্য অনেক ইন্টারনেট মার্কেটার দ্রুত ওয়েবসাইট র্যাএঙ্ক করার জন্য ব্যাকলিঙ্ক ক্রয় করে। ব্যাকলিঙ্ক ক্রয় করতে গিয়ে অনেকে স্প্যামিং ব্যাক লিঙ্ক ক্রয় করে। এই স্প্যামিং ব্যাকলিঙ্কের জন্যই ওয়েবসাইট পেনাল্টিতে পরে।
২. ডুপ্লিকেট কন্টেন্টঃ
একটি ওয়েবসাইটের জন্য কন্টেন্ট হল প্রাণ। সেই কন্টেন্ট যদি নিজে তৈরি না করে অন্যের কন্টেন্ট চুরি করে ব্যবহার করেন তাহলে গুগল আপনার ওয়েবসাইটকে পেনাল্টি দিবে।
কোয়ালিটি কন্টেন্ট তৈরি করাও একটি চ্যালেঞ্জ। কারণ এর জন্য অনেক্ষেত্রে আপনাকে ভালো পরিমান অর্থও ইনভেস্ট করতে হয়। সে জন্য অনেকে অন্য কোন ওয়েবসাইট থেকে কপি করে কন্টেন্ট তৈরি করে অথবা লো-কোয়ালিটির কন্টেন্ট তৈরি করে। কিন্তু এই ধরণের কন্টেন্ট গুগল এর কাছে গ্রহনযোগ্য নয় এবং গুগল ওয়েবসাইটকে পেনাল্টি দেয়। গুগল চায়, প্রতিটি কন্টেন্ট ইউনিক এবং তথ্যবহুল হয়। সে জন্য যখন কন্টেন্ট তৈরি করবেন ভালো কন্টেন্ট রাইটার দ্বারা ইউনিক এবং তথ্যবহুল কন্টেন্ট তৈরি করুন।
৩. H1 ট্যাগঃ
ট্যাগ একটি ওয়েবসাইটের গুরুত্বপূর্ন অংশ গুলোর মধ্যে একটি। এই ট্যাগ দ্বারা গুগল বুঝতে পারে একটি পেইজটি কি সম্পর্কে তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু আপনি যদি অতিরিক্ত H1 ট্যাগ ব্যবহার করেন তাহলে আপনার ওয়েবসাইট র্যাঙ্কিং না হয়ে গুগল পেনাল্টি তে পড়বে। কারণ আপনি গুগল কে বিভ্রান্ত করছেন।
৪. অন্য ভাষার ওয়েবসাইট থেকে বেশি লিঙ্ক হলেঃ
লিঙ্ক এমন একটি বিষয় যার সম্পর্কে সবসময় সচেতন থাকতে হয়। আপনি এক ভাষার ওয়েবসাইটের জন্য আরেক ভাষাতে তৈরি ওয়েবসাইটে লিঙ্ক করলেন তাহলে আপনার ওয়েবসাইট পেনাল্টি খাবে। যেমনঃ আপনার ওয়েবসাইট হচ্ছে বাংলা ভাষায় লেখা কিন্তু আপনার অনেক লিঙ্ক করা আছে ইংলিশ ভাষায় লেখা ওয়েবসাইটে ।
৫. হিডেন লিংকঃ
আপনার ওয়েবসাইটে যেই লিঙ্ক থাকুকনা কেন লিঙ্ক যেন দেখা যায় এবং ভিজিটরের কাজে লাগে। অনেক সময় লিঙ্কের রঙের সাথে ব্যাকগ্রাউন্ডের রং মিলে গেলে লিঙ্ক দেখা যায় না অথবা ডিজাইনারের ভুলের কারণে লিঙ্ক হিডেন হয়ে যায়। অনেকে গুগল এর সাথে গেম খেলার জন্য হিডেন লিঙ্ক ব্যবহার করেন। আমি সব সময় বলি, ডাকাত এর ঘরে ডাকাতি হয় না, তাই নিয়ম মেনে চলুন। এই হিডেন লিঙ্ক গুগল পছন্দ করে না। তাই ওয়েবসাইটে হিডেন লিঙ্ক ব্যবহার করা যাবে না।
৬. স্প্যামিং কমেন্টঃ
কমেন্টের মাধ্যমে ব্যাকলিঙ্ক তৈরি করা বা ভিজিটর বৃদ্ধি করা একটি জনপ্রিয় এবং কার্যকরী কৌশল। কিন্তু আপনি যদি অটোমেটেড ভাবে কমেন্ট তৈরি করেন বা স্প্যামিং কমেন্ট করেন তাহলে গুগল আপনার ওয়েবসাইটে পেনাল্টি দিবে। অনেকে রোবট ব্যবহার করে দ্রুত অনেক কমেন্ট পোষ্ট করে লিঙ্ক স্থাপন করার জন্য।
৭. বেশি কীওয়ার্ড ব্যবহার করলেঃ
নতুন ইন্টারনেট মার্কেটারদের মধ্যে এই ভুলটি দেখা যায় যে, কীওয়ার্ড দ্বারা ওয়েবসাইট র্যা ঙ্ক করাতে গিয়ে কন্টেন্টে অনেক বেশি কীওয়ার্ড ব্যবহার করে ফেলে। এর ফলে গুগলের পেনাল্টিতে পড়তে হয়। সবসময় চেষ্টা করুন কীওয়ার্ড যেন আর্টিকেলে ন্যাচারাল ভাবে থাকে। গুগলের নিয়ম অনুসারে ০.৭% কীওয়ার্ড থাকা যাবে কন্টেন্ট এর মধ্যে।
Training is an Investment
In the Future of your Business
Learn Digital Marketing from Moshiur Monty – https://goo.gl/UG3F3h
৮. স্লো স্পীডঃ
ওয়েবসাইটের স্পীড র্যাটঙ্কিং এর জন্য অন্যতম ফ্যাক্টর। কোন ওয়েবসাইট লোড হতে দেরি হলে ব্যবহারকারী সেই ওয়েবসাইট ভিজিট করতে চায় না। এতে করে ওয়েবসাইট এর বাউন্স রেট বেড়ে যায়, বাউন্স রেট বেশি ওয়েবসাইট র্যানঙ্ক করতে অনেক কষ্ট হয় , এমনকি পেনাল্টিও হতে পারে।
৯. অনেক বেশি আউটবাউন্ড লিংকঃ
কন্টেন্টের প্রয়োজনে আমাদের অনেক সময় আউটবাউন্ড লিঙ্ক ব্যবহার করার প্রয়োজন হয় যেমনঃ কখনো কন্টেন্টের বিশ্বাষযোগ্যতা বৃদ্ধি করার জন্য, কখনো অন্য কাউকে রেফার করার জন্য ইত্যাদি কারণে আমাদের আউটবাউন্ড লিঙ্ক ব্যবহার করতে হয়। এই ধরণের লিঙ্ক বেশি ব্যবহার করলে গুগল অপছন্দ করে। গুগলে মনে করে কারো কাছ থেকে সুবিধা পাওয়ার জন্য আউটবাউন্ড লিঙ্ক ব্যবহার করা হচ্ছে।
১০. অতিরিক্ত অ্যাফিলিয়েট লিঙ্ক বা অ্যাড ব্যবহারঃ
একটি ওয়েবসাইটে অ্যাফিলিয়েট লিঙ্ক বা অ্যাড থাকবে এটা স্বাভাবিক। কিন্তু আপনি যদি সেই লিঙ্ক বা অ্যাড ওয়েবসাইটের বেশিভাগ অংশ জুড়ে ব্যবহার করেন তা হলে ভিজিটর বিরক্ত হয় এবং ভিজিটর পর্যাপ্ত তথ্য না পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
১১. ব্লাকহেট এসইও পদ্ধতি ব্যবহারঃ
কোন প্রকার ব্লাকহেট এসইও পদ্ধিতি গুগল এর কাছে গ্রহনযোগ্য নয়। তাই যদি আপনি ওয়েবসাইট দ্রুত র্যা ঙ্ক করার জন্য ব্লাক হেট পদ্ধতি ব্যবহার করেন এবং গুগল তা বুঝতে পারে তাহলে আপনার ওয়েবসাইট র্যাকঙ্কিং হারাতে পারে।
১২. দ্রুত ব্যাকলিঙ্ক স্থাপনঃ
ব্যাকলিঙ্ক হল একটি ওয়েবসাইট র্যা ঙ্ক করার জন্য সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং বিষয়। এটি কোন সংক্ষিপ্ত সময়ে হয় না। এর জন্য প্রয়োজন অনেক সময়ের এবং পরিপূর্ন কৌশল। আপনি যদি কোয়ালিটি ব্যাকলিঙ্ক তৈরি করতে চান তাহলে ধৈর্য ধরতে হবে। কিন্তু নতুনরা কোন রকম ধৈর্য না ধরে র্যােঙ্ক করার জন্য দ্রুত বিভিন্ন পদ্ধতিতে ব্যাক্ললিঙ্ক তৈরি করে। এই বিষয়টি আপনার ওয়েবসাইট এর জন্য খারাপ।
এই টুলটির মাধ্যমে আপনি দেখতে পারেন আপনার ওয়েবসাইট গুগল এর স্যান্ডবক্স এ আছে কিনা কিংবা পেনাল্টি হয়েছে কিনা –
http://pixelgroove.com/serp/sandbox_checker/
সবার শেষে একটা কথাই বলতে পারি, অসৎ ভাবে কিছু করে সবার সামনে থাকার চিন্তাভাবনা আপনার জন্য বড় ক্ষতিকে দেকে আনতে পারে। ব্যক্তিগতভাবে আমি এতো কিছু মাথায় রাখি না, এমনকি আমি গুগল এর নতুন নতুন আপডেট গুলোর নামও ঠিক মত মনে রাখি না, আমি শুধু এটাই মাথাই রাখি যে, যা করতে হবে সৎ উপায়ে করতে হবে, তাহলে ক্ষতি হবে না।
Moshiur Monty
Digital Marketing Trainer, Bdjobs Training.
অনুপ্রেরণা যোগাতে আমার সাথেই থাকুন ~~ https://www.facebook.com/MoshiurMontyBD/
ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কিত বাংলা আর্টিকেল পড়তে ভিজিট করুনঃ
Your email address will not be published. Required fields are marked *