Dhaka.
একটি স্বপ্ন ! একটি সুযোগ ! একজন উদ্যোক্তা
.
আমাদের প্রত্যেকের জীবনে অনেক স্বপ্ন। কেউ চোখ খুলে দেখে, কেউ চোখ বন্ধ করে দেখে। কেউ স্বপ্ন দেখে তাকে বাস্তব করার জন্য কাজ করে, আর কেউ হাঁসতে হাঁসতে সব ভুলে যায়।
.
স্বপ্ন হবে বাস্তব?
এতো অসম্ভব।
সবাই তো আর অনন্ত জলিল না।
আর যে স্বপ্ন কে বাস্তবে দেখার জন্য সামনে এগিয়ে যেতে চায় সে মনে অনেক আশা, মনে অনেক শক্তি নিয়ে পা বাঁড়ায়।
.
বলে নেয়া ভালো আমি সৎ স্বপ্নের অর্থাৎ ভালো কাজের স্বপ্নের কথা বলছি।
কাউকে ঠকিয়ে রাজ্য জয় করে রাজা হয়ে যাওয়ার মত স্বপ্নের কথা বলছি না।
আমাদের সমাজে প্রথম বাঁধা আসতে থাকে পরিবার এবং আত্মীয় থেকে।
এই কাজ তুমি করবা?
ভুল করছো, সময় নষ্ট করো না, তোমাকে দিয়ে হবে না …
আমার ছেলে তো এখনো ছোট ……
আমার মেয়ে তো এখনো নিজের হাতে ভাত খেতে পারে না।
সেই ছেলে বা মেয়ে কে তার পরিবার বড় কিছু করার জন্য মনে শক্তি দিচ্ছে না।
আত্মীয় থেকে সাহায্য পাওয়া যায় না,
যদি ছেলেটা বড় কিছু করে ফেলে তাহলে তো আমাদের চাইতে বড় হয়ে যাবে।
.
সমাজ এবং শিক্ষা ব্যবস্থা তো আরো করুণ …
অনেকেরতো পড়াশোনা শেষ করতে করতে ২৮-৩০ বছর পার হয়ে যায়।
আয়ুষ্কাল তো ৫৫-৬০ বছর …
গড়ে আয়ুষ্কাল ৭২ বছর বলা হলেও, যাদের পোড়া কপাল থাকে,
তাদের সব দিক এই পোড়া কপাল হয়।
কবে কি করবে …
কবে পরিবার করবে
আর কবেই বা নিজের সন্তান এর জন্য কিছু গড়বে।
সব বুঝতে বুঝতেই তো অনেকের জীবনের শেষ ঘণ্টা বেজে যায়।
.
চাকুরী করতে গেলে জিজ্ঞেস করে কয় বছরের অভিজ্ঞতা ?
বয়স কম হতে হবে,
যাতে দৌড়ে দৌড়ে কাজ করতে পারে কিন্তু অভিজ্ঞতা থাকতে হবে কয়েক বছর এর।
A+ A+ পেয়ে পেয়ে এত A+ হয়েছে যে সার্টিফিকেট-ই অনেক সময় কোম্পানি দেখতে চায় না।
হাস্যরস করে বলতে হয় …
২৫ বছর এর ছেলের ১০ বছর এর কাজের অভিজ্ঞতা থাকলে কাজ হবে।
.
যাই হোক, এত কিছুর পরেও অনেকে ঝুঁকি নেয় ।
নিজে কিছু করতে চায় …
নতুন কিছু করতে গেলে অবশ্যই একজন কে বিশ্বাস করতে হয়,
বিশ্বাস না করলে তো আপনি শুরুটাই করতে পারছেন না ,
সেই ব্যক্তির সব কথা শুনতে হয়।
বলা বাহুল্য, সে ব্যক্তি কিন্তু এভাবেই নিজের সাথে তাকে নেয় না,
ছেলেটির কাজের ক্ষমতা দেখেই নেয় তার সাথে এবং নিজের জন্যই নেয়।
ছেলেটি তার বেস্ট দেয়ার জন্যই সবসময় চেষ্টা করবে তা তো স্বাভাবিক।
কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মহান মানুষ পাওয়া দুস্কর।
যে আপনাকে সাহায্য করবে, বড় ভাই আর মত আপনার পাশে দাঁড়াবে।
অনেক ক্ষেত্রেই অনেক বড় ভাই নিজের লাভ এর হিসেব করেই ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছে।
.
আমাদের সমাজে যেমন মহান বড় ভাই এর সংখ্যা কম তেমনি গাধা ছোট ভাইদের সংখ্যাও বেশি।
গাধা ছোট ভাই গুলো সেই বড় ভাইদের পিছে ছুটে,
যারা সবসময় রস মাখিয়ে কথা বলে মানুষের মন জয় করে রাখে এবং মুদ্রার আসল পিঠ দেখতে দেয় না।
আবার এমন গাধা ছোট ভাইও আছে যারা নিজেদের এতো চালাক এবং বুদ্ধিমান ভাবে যে,
তাদের পা যেন মাটিতেই পরে না, ভাবের আকাশে উড়তে থাকে।
.
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, মহান বড় ভাই এর সাথে দেখা হয়, ভাবের ছোট ভাই এর।
আর খেঁটে খাওয়া ছোট ভাই এর সাথে দেখা হয় স্বার্থপর ভাই এর।
একদম বাংলা সিনেমা।
.
.
আমি বলি, তাদের বেশি ভালোবাসো যারা মুহূর্তে মুহূর্তে রেগে যায়, কারণ রেগে যাওয়া ব্যক্তি গুলো মনের আগুন প্রকাশ করে দেয় এবং ৫ মিনিট পর আবার ঠিক হয়ে যায়।
.
যারা ভাগ্যবশত মহান ভাই পেয়ে যায় তারা জীবনে সামনের দিকে যেতে থাকে। কারণ মহান ভাই খুব ভালো করে জানে, আমি যদি কারো বড় ভাই হই তাহলে ছোট ভাই আমার বিপদের দিনে আমার পাশে দৌড়ে এসে দাঁড়াবে, আমাকে সম্মান করবে যতদিন বেঁচে থাকবে। দুজন একত্রে বড় কিছু করা যাবে। এমন মহান ভাইরা কম থাকলেও, সমাজে যে একদম নেই তা নয়।
.
কিন্তু যারা অভাগ্য বসত, স্বার্থপর ভাইদের সাথে আটকে যায় তাদের সময় এবং টাকা এর সাথে সাথে বিশ্বাস হারিয়ে যায়। কারণ স্বার্থপর ভাই গুলো শুধু নিজের লাভ বুঝে, বুঝে কি করে নতুন ছেলেকে ব্যাবহার করে পয়সা কামানো যায়, যেদিন থেকে বুঝতে থাকে ছেলেটাকেও পয়সা দিতে হবে বা ছেলেটা তার সত্যি রুপ জেনে যাচ্ছে তখন আবার নতুন ছেলের আগমন হয়। এমন চলে এসেছে এবং চলছে। স্বার্থপর কখনই ভাবে না কারো কষ্ট, কারো বিশ্বাস ভেঙ্গে যাওয়া কথা। অভাগা ছেলেটিকে লাথি মারতে দ্বিধা বোধ করে না।
.
এমন সব বাঁধা জীবনে আসতেই থাকে।
এসব বাঁধা অনেক উদ্যোক্তা কে আটকে দেয়, থামিয়ে দেয় তাদের জীবনের গতি, ভুলে যায় স্বপ্ন দেখতে।
আর খুব অল্প সংখ্যক উদ্যোক্তা, এদের সাথে লড়াই করে সামনে এগিয়ে যায়।
এর মধ্যেও অনেক স্বার্থপর আবার তাদের জিদ ধরে রাখে,
কি আমার লাথি খেয়েও মাঠে দাড়িয়ে থাকবে, দাড়া আসছি আমি … হাহাহাহা
এর জন্যই আমাদের দেশে উদ্যোক্তা এর সংখ্যা অনেক কম।
উদ্যোক্তা গড়তে ট্রেইনিং লাগে না … দরকার সহযোগিতা ।
.
বইয়ের পাতায় উদ্যোক্তাদের জীবনী জানিয়ে কি হবে,
যদি উদ্যোগ নেয়ার সুযোগ দেয়া না হয়।
তারপর আমরা বড় হয়ে বিদেশী উদ্যোক্তাদের কথা ভেবেই স্বপ্ন দেখতে থাকি,
নিজেরাও ভুলে যাই তাদের সমাজ এবং আমাদের সমাজ এক নয়,
দেশের উদ্যোক্তাদের জীবনী জানাটাই অতীব জরুরী।
.
কথা গুলোর সাথে আমার জীবন কতটুকু জড়িত তা গুরুত্বপূর্ণ নয়।
আপনার জীবন এর কথা ভাবুন, দেখুন আপনি কোন অবস্থায় আছেন। যদি মনে করেন সুযোগ আছে কিছু পরিবর্তন করার বা সুযোগ আছে নতুন কিছু করার বা সুযোগ আছে নিজের সময় কে বাঁচানোর বা সুযোগ আছে স্বার্থপর থেকে নিজেকে বাঁচানোর তাহলে আজই ভাবুন কি করা উচিত।
.
মনে রাখবেন, আপনার জীবন দিয়ে দিলেও স্বার্থপর কিন্তু তার ভাবনা পরিবর্তন করে আপনার জীবন বা আপনাকে সাহায্যের কথা ভাববে না।
.
শেষ করার আগে বলতে চাই,
আপনার মন যত দিন সৎ থাকবে তত দিন মাটিতে আপনাকে কেউ মেশাতে পারবে না।
যতদিন আল্লাহ্ আপনাকে সাহায্য করবেন, ততদিন পর্যন্ত আপনাকে কেউ ডুবাতে পারবে না।
আল্লাহ্ তার প্রিয় বান্দা এর সবচেয়ে বেশি পরীক্ষা নেয়,
দেখতে চায় আপনার মন কতদিন পর্যন্ত পরিষ্কার থাকে, যুদ্ধ করে যান।
.
আমি বিশ্বাস করি, স্বার্থপর এর জন্য আছে অনেক বড় গর্ত যে গর্তে পরার পর সে আর কোন দিন উঠতে পারবে না,
আর আপনি তো গর্তে পরছেন আবার উঠছেন,
আবার পরছেন আবার উঠছেন।
আপনার বিশ্বাস, যদি কেউ ভাঙ্গে তাতে কষ্ট পাবেন না, হাসবেন।
কারণ যেদিন ওই স্বার্থপর ব্যক্তির বিশ্বাস ভাঙবে সেদিন হয়ত সে সহ্যই করতে পারবে না।
Your email address will not be published. Required fields are marked *