অফ-পেজ SEO ২০১৮

অফ-পেজ SEO এক সময়ের অনেক জনপ্রিয় পদ্ধতি। SEO বলতে অফ-পেজ SEO-কে বোঝানো হত। সময়, প্রতিযোগিতা এবং গুগল নিয়ম-নীতি এর পরিবর্তন এর সাথে সাথে SEO পদ্ধতি এর অনেক পরিবর্তন এসেছে। অফ-পেজ SEO এর চাইতে অন-পেজ SEO এর চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং গুগল সার্চ এর রেজাল্ট দিন দিন উন্নত হওয়ার পিছে অন-পেজ SEO এর বড় হাত রয়েছে। সময়ের সাথে সাথে অফ-পেজ SEO এর পদ্ধতিতেও অনেক পরিবর্তন এসেছে।


প্রশ্ন অনেক সময় আসে, অন-পেজ SEO নাকি  অফ-পেজ SEO এর দিকে বেশি নজর দেয়া উচিত? অন-পেজ SEO তে আপনি সবচেয়ে বেশি নজর দিবেন, এর কার্যক্ষমতা সবচেয়ে বেশি। অন-পেজ SEO এর সব কার্যক্রম করার পরও যদি আপনি র‍্যাঙ্কিং এ অনেক দূরে থাকেন এবং আরো সহয়তা এর প্রয়োজন মনে হয় তখন অফ-পেজ SEO এর জন্য সময় দিবেন। এছাড়া মার্কেটিং এর জন্য আমরা অনেক ক্ষেত্রে অফ-পেজ SEO এর সাথে সম্পর্কিত কিছু কাজ প্রথম দিক থেকেই করে থাকি।


চলুন জেনে নেয়া যাক ২০১৮-তে অফ-পেজ SEO এর জন্য কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে –


১. সোশ্যাল মিডিয়া

সোশ্যাল মিডিয়াতে আপনার ওয়েবসাইট নিয়ে কথা বার্তা বলা বা লিঙ্ক শেয়ার করা বা আর্টিকেল এর লিঙ্ক শেয়ার করা অফ-পেজ SEO এর একটি অংশ ধরা হয়ে থাকে। অন্য দিক দিয়ে এ ধরণের কার্যক্রমকে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বলা হয়। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর কার্যক্রম SEO র‍্যাঙ্কিং এ অনেক সাহায্য করে থাকে। গুগল সোশ্যাল মিডিয়া এর কার্যক্রম পছন্দ করে।


যেসব সোশ্যাল মিডিয়াতে আপনি আপনার কার্যক্রম করতে পারেন –

• Facebook.
• Twitter.
• Google Plus.
• Pinterest.
• LinkedIn.

২.  সোশ্যাল বুকমার্কিং

সোশ্যাল বুকমার্কিং আপনার ওয়েবসাইট এর র‍্যাঙ্কিং এবং ওয়েবসাইট এ ট্রাফিক বাঁড়াতে সাহায্য করবে। বেশি ভালো ফলাফল এর জন্য আপনি আপনার প্রত্যেকটি আর্টিকেল পেজ বুকমার্কিং করাতে পারেন, শুধুমাত্র হোম পেজ না করিয়ে।


সোশ্যাল বুকমার্কিং এর জন্য যেসব ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে পারেন –

• Reddit.
• Delicious.
• Stumbleupon.
• Digg.
• Scoop it.

৩. লোকাল লিস্টিং

কোন নির্দিষ্ট শহর বা এলাকাকে টার্গেট করে SEO করতে লোকাল লিস্টিং অনেক বেশি জরুরী। লোকাল SEO এর ক্ষেত্রে প্রথম ধাপ হচ্ছে লোকাল লিস্টিং করা। লোকাল লিস্টিং এর জন্য অনেক লোকাল লিস্টিং ওয়েবসাইট আছে, সেসব ওয়েবসাইট এ আপনি লিস্টিং করতে পারেন। লিস্টিং এর পূর্বে দেখে নিবেন, ওয়েবসাইটটি কি একটু জনপ্রিয় কিনা।


৪. প্রেস রিলিজ

সহজ ভাষায় বুঝতে অনলাইন যে সব পত্রিকা বা আর্টিকেল ওয়েবসাইট আছে সেসব ওয়েবসাইট এ নিজের ব্যবসায় এবং নিজের ব্যবসায়িক ওয়েবসাইট সম্পর্কে লেখা পাবলিশ করানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। এ পদক্ষেপ আপনার ব্র্যান্ডিং এ এবং আপনার ওয়েবসাইট এ ট্রাফিক বাড়তে সাহায্য করবে। এর সাথে সাথে একটি লিঙ্কও তৈরি হচ্ছে।


৫. আর্টিকেল সাবমিশন

আপনি আপনার নিজের লেখা আর্টিকেল (নতুন, যা কোথাও ব্যবহার করেন নি) কিছু জনপ্রিয় ওয়েবসাইট এ জমা দিতে পারবেন, লেখা ভালো হলে সেটা পাবলিশ হবে। জমা দেয়ার পর তারা আপনাকে পরবর্তীতে জানিয়ে দিবে তারা কি পাবলিশ করবে নাকি না। আপনি আপনার BIO সেকশন এ আপনার ওয়েবসাইট এর লিঙ্ক দিতে পারছেন। এটা খুব ভালো একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে আপনি জনপ্রিয় ওয়েবসাইট এ আপনার আর্টিকেল পাবলিশ করতে পারছেন এবং এর সাথে সাথে ওয়েবসাইট এর একটি লিঙ্কও দিতে পারছেন।


৬. প্রশ্ন এবং উত্তর

ট্রাফিক পাওয়ার একটি ভালো মাধ্যম হচ্ছে Question and Answer ওয়েবসাইট। কিছু জনপ্রিয় Question and Answer ওয়েবসাইট হচ্ছে Yahoo Answer, Quora. আমি এই দুইটি ওয়েবসাইট এর কথা সবসময় বলে থাকি, এর চাইতে বেশি দরকার নেই। এখানে অনেকেই অনেক কিছু জানার জন্য প্রশ্ন করে, উত্তর দেয়ার সময় আপনার প্রশ্ন এর সাথে সম্পর্কিত ওয়েবসাইট লিঙ্ক দিতে পারবেন। এসব ওয়েবসাইট এ প্রতিদিন অনেক অনেক প্রশ্ন করা হয়, আপনি আপনার কাজ সম্পর্কিত সেকশন এর প্রশ্ন উত্তর দিয়ে তাদের আপনার ওয়েবসাইট এ পাঠাতে পারবেন। এসব ওয়েবসাইট এর কিছু নিয়ম আছে, প্রথমে নিয়ম গুলো দেখে নিবেন।


৭. ছবি সাবমিশন

আপনার ওয়েবসাইট এর ছবি অনেক ক্ষেত্রেই ট্রাফিক আনতে যথেষ্ট ভূমিকা পালন করে। তাই বলা হয়, ছবি এর অন-পেজ আপ্টিমাইজেশন সঠিক ভাবে করার জন্য। আপনি আপনার ওয়েবসাইট এর ছবি গুলো,ওয়েবসাইট এর ছবি গ্রহণ করে এমন ওয়েবসাইট এ সাবমিট করে তার মাধ্যমে ট্রাফিক পেতে পারেন। ওয়েবসাইট এর ছবি গ্রহণ করে এমন কিছু জনপ্রিয় ওয়েবসাইট হচ্ছে –

• Flickr.
• Imgur.
• Tumblr.
• Pinterest.

৮. ভিডিও সাবমিশন

বর্তমানে ভিডিও হচ্ছে সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম, অডিয়েন্স সবচেয়ে বেশি পছন্দ করে ভিডিও দেখতে এবং ভিডিও ব্র্যান্ডিং এ যথেষ্ট প্রভাব ফেলে। ভিডিও বানানো একটু ঝামেলাকর কিন্তু এ ব্যাপার এ কোন প্রকার ছাড় দেয়া উচিত বলে আমি মনে করি না।


ভিডিও সাবমিশন এর জন্য যে সব ভালো ওয়েবসাইট রয়েছে তা হলো –

• Youtube.
• Vimeo.
• Dailymotion.

৯. ডকুমেন্ট শেয়ার

যদি আপনার ওয়েবসাইট এ কোন ডকুমেন্ট থেকে থাকে (পাওয়ার পয়েন্ট স্লাইড), তাহলে আমি শুধু একটি ওয়েবসাইট এর নাম বলতে চাই, Slide Share.  Slide Share এখন LinkedIn এর একটি অংশ। এখানে আপনি আপনার ওয়েবসাইট এর স্লাইড সরাসরি দিতে পারবেন না কিন্তু স্লাইড সরাসরি এখানে আপলোড করতে পারবেন এবং বর্ণনা অংশে বর্ণনা এর সাথে আপনার ওয়েবসাইট এর লিঙ্কও দিতে পারবেন।


১০. ব্রোকেন লিঙ্ক বিল্ডিং

অনেকসময় দেখা যায় লিঙ্ক আছে কিন্তু কাজ করছে না, এমন লিঙ্ককে ব্রোকেন লিঙ্ক বলে। এমন ধরণের লিঙ্ক পেয়ে গেলে ঐ বিষয় এর উপর নিজের ওয়েবসাইট এ একটি আর্টিকেল লিখে ব্রোকেন লিঙ্ক এর জায়গায় নিজের ওয়েবসাইট এর লিঙ্ক বসিয়ে দিতে পারেন। এমন ধরণের কাজ অনেক সময় Wikipedia তে করা যায়, নিজের বিষয় এর সাথে যায় এমন পেজ এ যদি ব্রোকেন লিঙ্ক থেকে থাকে তখন আপনি এ কাজটি করতে পারেন। অনেকেই এ ধরণের কাজ করে থাকে এবং জনপ্রিয় ওয়েবসাইট এ লিঙ্ক বিল্ড করে থাকে।


এখানে অনেকগুলো পদ্ধতি নিয়ে কথা বলা হয়েছে। যে পদ্ধতি ব্যবহার করতে যাবেন না কেন, ঐ ওয়েবসাইট এর নিয়ম-কানুন আগে ভালো ভাবে পরে নিবেন, যেন কোন ধরণের ভুল না হয়।


Moshiur Monty
Digital Marketing Trainer, Bdjobs Training.
অনুপ্রেরণা যোগাতে আমার সাথেই থাকুন ~~ https://www.facebook.com/MoshiurMontyBD/

ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কিত বাংলা আর্টিকেল পড়তে ভিজিট করুনঃ

https://moshiurmonty.com/