Dhaka.
কিভাবে নিজের প্রোডাক্টিভিটি বৃদ্ধি করা যায়?
প্রতিটি মানুষ কাজ করার ক্ষেত্রে একই সময় পায় কিন্তু কেউ সেই সময়ের মধ্যে অনেক কাজ করতে পারে আবার কেউ নির্দিষ্ট কাজটাই করতে পারে না। এর জন্য কিছু কারণও রয়েছে। বিভিন্ন রকম ছোট ছোট কারণে একজন মানুষ তার কাজ সম্পন্ন করতে পারে না অথবা নিজের প্রোডাক্টিভিটি বাড়াতে পারে না। আপনি আপনার দৈনন্দিন কাজে কিছু পরিবর্তন আনতে পারলে কাজের প্রোডাক্টিবিটি অনেক বাড়াতে পারবেন।
১) কাজের সময় নির্ধারন করুনঃ
প্রতিটি কাজ করার একটি নির্দিষ্ট সময় থাকা উচিত। আপনার কাজ সম্পন্ন করার জন্য কতটুকু সময় প্রয়োজন তা নির্ধারন করুন এবং কাজ শুরুর সময়কে নির্ধারন করুন। যদি একটি কাজ শেষ করতে অনেক সময় ব্যয় করেন সেই সময়কে কমানোর চেষ্টা করুন। কি কি কারণে সময় বেশি লাগতে পারে তা চিহ্নিত করে তা পরিহার করুন।
২) কাজের মাঝে মাঝে বিরতিঃ
কাজের মাঝে মাঝে নির্ধারিত বিরতি কাজে মনযোগী হতে সাহায্য করে। গবেষনায় দেখা গিয়েছে কোন ব্যক্তি যদি দীর্ঘক্ষণ কাজ তাহলে তার চিন্তার বাইরে সে ভুল করে বসতে পারে যা তার চোখে পরতে সময় লেগে যেতে পারে। তাই কাজের ফাকে মাঝে মাঝে ছোট বিরতি দিন। এটি একজন ব্যক্তির ধারাবাহিক পার্ফমেন্স ধরে রাখতে সাহায্য করে।
৩) কাজের ডেডলাইন তৈরি করুনঃ
নিজেই নিজের প্রতিটি কাজ শেষের ডেডলাইন তৈরি করুন। শুধু ডেডলাইন তৈরি করলেই হবে না। সেই ডেডলাইন কে জীবনের শেষ ডেডলাইন ভেবে কাজ করুন, তাহলে আপনার কাজ সঠিক সময়ে শেষ হবে এবং কাজের কোয়ালিটিও ঠিক থাকবে।
৪) নির্দ্বিধায় মিটিংকে না বলুনঃ
আমাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ন সময় নষ্ট করার জন্য অন্যতম দায়ী বিভিন্ন ধরণের অপ্রয়োজনীয় মিটিং। দেখা গেছে শুধু অপ্রয়োজনীয় মিটিং নয় প্রয়োজনীয় মিটিং –এও অনেক সময় নষ্ট হয়। একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদেরও প্রচুর সময় নষ্ট হয় মিটিং এর মাধ্যমে। তাই অপ্রয়োজনীয় মিটিং থেকে নিজেকে বিরত থাকুন। প্রয়োজনীয় মিটিং-এর ক্ষেত্রে সময় নষ্ট করবেন না। অনেক ক্ষেত্রে কোম্পানী থেকে প্রত্যেকদিন অকারণেই মিটিং ডাকা হয়, আবার অনেক ক্ষেত্রে জরুরী মিটিং বেশি কথার কারণে কোন কাজের হয় না, তাই বুঝেই পদক্ষেপ নিন।
৫) মাল্টি টাস্কিং ত্যাগ করুনঃ
মনোবিজ্ঞানীরা বিভিন্ন গবেষণায় দেখেছেন এক সময়ে কয়েকটা বিষয় নিয়ে কাজ করলে তা আপনার সময় এবং প্রোডাক্টিভিটি দুটোই নষ্ট করে। আমাদের দেশের তরুণ তরুণীদের মাঝে এই ধরণের প্রবণতা রয়েছে, এক সাথে কয়েকটি কাজ করে। যার ফলে কোন কাজই পরিপূর্নভাবে হয় না, যা আপনার প্রোডাক্টিবিটি কমিয়ে দেয়। একত্রে কাজ করাকে অনেকে এক ধরণের ভাব মনে করে, কিন্তু অতিরিক্ত ভাব যেন নিজের ক্ষতি না করে। এক গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে, মাল্টি টাস্কিং এর কারণে আপনার অতিরিক্ত ৪০% বেশি সময় নষ্ট হতে পারে ।
৬) কাজের সময় সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকুনঃ
সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের যোগ্যাযোগ মাধ্যমে একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন নিয়ে এসেছে, ব্যবসায়ের জন্য নতুন একটি মাধ্যম তৈরি করেছে। কিন্তু মূল্যবান সময় কে হত্যা করার জন্য সোশ্যাল মিডিয়া সবচেয়ে বেশি দায়ী। বিশেষ করে অনেকে কাজের ফাকে ফাকে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে। এর কারণে সময় নষ্ট হয় এবং কাজের প্রতি মনোযোগ হারায়। তাই যে কোন কাজ করার সময় সোশ্যাল মিডিয়া যেমনঃ ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব ইত্যাদি থেকে দূরে থাকুন।
৭) সুন্দর কর্মপরিবেশ তৈরি করুনঃ
একটি সুন্দর অফিস মনকে প্রভাবিত করার জন্য গুরুত্বপূর্ন অবদান রাখে। তাই আপনার অফিস অথবা কর্মক্ষেত্র সুন্দর এবং আলো বাতাস পূর্ন রাখুন। কাজ করার সময় আপনার কর্মক্ষেত্র শব্দ দূষণ থেকে মুক্ত রাখার চেষ্টা করুন। আপনি চাইলে আপনার অফিস বা কর্মক্ষেত্র একটি সুন্দর রং দিয়ে সাজাতে পারেন, বিভিন্ন রকম ফুল বা আপনার কর্মের সাথে সম্পৃক্ত ছবি দিয়ে একটি সুন্দর কর্ম পরিবেশ তৈরি করতে পারেন। অনেক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, একটি সুন্দর পরিবেশ প্রোডাক্টিবিটি বাডিয়ে দেয় কয়েক গুন।
৮) লোক দেখানো মনোভাবঃ
অনেকের মাঝে বিশেষ করে আমাদের দেশের মানুষের মাঝে একটি সাধারণ সমস্যা দেখা যায় যা তারা নিজেরাও উপলব্দি করতে পারেন না। সেই সমস্যা হলো লোক দেখানো কর্মকাণ্ড বা লোক দেখানো কথা বার্তা। কাজ কম করা কিন্তু মানুষকে বেশি বেশি দেখানো। এই ধরণের সমস্যা আপনাকে কাজ করার প্রতি অমনোযোগী করে তুলে। ফলে আপনার প্রোডাক্টিবিটি কমে যায়। তাই এই ধরণের মানসিকতা থেকে নিজেকে দূরে রাখুন।
Training is an Investment
In the Future of your Business
Learn Digital Marketing from Moshiur Monty – https://goo.gl/UG3F3h
৯) শারিরিক ব্যায়ামঃ
শারিরিক ব্যায়াম এমন একটি কাজ যা আপনার শরীরকে সুস্থ রাখে এবং মনকে সতেজ করে আত্ববিশ্বাস বৃদ্ধি করে দেয়। ভাবছেন কাজের সাথে ব্যায়াম এর কি সম্পর্কে বা ব্যায়াম তো সকালে বা ব্যায়ামাগার এ গিয়ে করার বিষয়, ব্যাপারটা আসলে ঠিক নয়, বসে থেকে কাজ করতে করতে অনেক সময় আপনার শরীর ব্যথা হয়ে যেতে পারে, তাই মাঝে মাঝে একটু হাঁটাহাঁটি করা জরুরী, এমনকি কাজের একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর হাঁটাহাঁটি করা আপনার মেরুদণ্ড এর জন্যও ভালো। ২-৩ ঘণ্টা পরপর ৫-১০ মিন হাটার চেষ্টা করবেন, নিজেকে অনেক হালকা মনে হবে এবং নতুন উদ্দমে আবার কাজ শুরু করতে পারবেন।
১০) টু- ডু লিস্ট তৈরি করুনঃ
টু-ডু লিস্ট এমন একটি পদ্ধতি যা সাড়া বিশ্বে প্রায় সকল সফল ব্যাক্তিরা ব্যবহার করে। সে জন্য আপনার সারা দিনের কাজের একটি টু-ডু্ লিস্ট তৈরি করুন এবং পর্যায়ক্রমে প্রতিটি কাজ সম্পর্ন করুন। তাহলে দেখবেন আপনার কাজ মিস হচ্ছে না এবং প্রতিটি কাজ সঠিকভাবে সঠিক সময়ে সম্পন্ন হচ্ছে। টু- ডু লিস্ট আপনি কম্পিউটার বা হাতে লিখেও করতে পারেন। কিন্তু রিসার্চ বলে, টু- ডু লিস্ট হাতে লিখে তা পালন করাটা কার্যক্ষম।
১২) সহকর্মীদের থেকে সুবিধা নিনঃ
সহকর্মীরা আপনার লক্ষ্য পূরনে সহায়ক। যখন কাজের পরিমান অনেক বেশি থাকে অথবা কোন কাজ আপনার চেয়ে আপনার সহকর্মী ভালো জানে তখন আপনার খুব কাছের সহকর্মীর মাধ্যমে কিছু কাজ করিয়ে নিন এবং শিখে নিন। এর জন্য সবসময় তাদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হয়।
এছাড়া আপনি যদি কম্পিউটার নির্ভর কাজ করে থাকেন তাহলে মাঝে মাঝে চোখের ব্যায়াম করতে পারেন, নয়ত আপনার চোখে ব্যথা বা অন্য কোনো সমস্যা হতে পারে একটানা কম্পিউটার এর দিকে তাকিয়ে থাকার কারণে। ৩০ মিনিট পরপর দুরের বস্তুর দিকে একটু তাকানো, আবার কাছের বস্তুর দিকে তাকানো, চোখ বন্ধ করা এবং খোলা এর মাধ্যমেও ব্যায়াম হতে পারে। কাজের মাঝে মাঝে পানি খাওয়ায় অভ্যাস করুন। দিনে অবশ্যই ৬-৮ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন।
সর্বোপরি, এসব বিষয় কোম্পানি নয়, আপনার স্বার্থে করার কথা ভাবুন, আপনার প্রোডাক্টিভিটি বৃদ্ধির সাথে সাথে অফিসে আপনার ভ্যালুও বৃদ্ধি পাবে।
শুভকামনা আপনার জন্য।
Moshiur Monty
Digital Marketing Trainer, Bdjobs Training.
অনুপ্রেরণা যোগাতে আমার সাথেই থাকুন ~~ https://www.facebook.com/MoshiurMontyBD/
ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কিত বাংলা আর্টিকেল পড়তে ভিজিট করুনঃ
Your email address will not be published. Required fields are marked *