Dhaka.
ভিডিও মার্কেটিং এ সফল হওয়ার জন্য আপনার যা জানা জরুরী
ইউটিউবে আর্নিং বলেন অথবা আপনার ব্যবসায়ের প্রচারই বলেন দুটো ক্ষেত্রেই ভিডিও মার্কেটং একটি কার্যকরী মাধ্যম। কিন্তু ভিডিও মার্কেটিং করার সময় অনেকে কিছু ভুল করে থাকে যা তাকে ব্যর্থ করে। সেই ভুল গুলো কখনো অবহেলা করে হয়ে থাকে আবার কখনো ইচ্ছা করে হয়ে থাকে। কিন্তু আমরা যদি একটু সচেতন হই, আমাদের কাজ গুলোকে একটু গুছিয়ে পরিকল্পনার সাথে করি তাহলেই ভিডিও মার্কেটিং সফল হয়ে যায়।
১. ভিডিও বানানোঃ
ভিডিও মার্কেটিং এ ব্যর্থ হওয়ার সবার প্রথম এবং সাধারন একটি কারণ হল ভিডিও বানানো। অর্থাৎ কোন রকম পরিকল্পনা বা কৌশল অবলম্বন না করে মার্কেটিং এর জন্য একটি ভিডিও প্রয়োজন সে জন্য ভিডিও বানানো। এমনকি ব্র্যান্ডিং এ কোন প্রভাব পড়বে কিনা সেই ধরনের চিন্তা ভাবনাও না করা। বিশেষ করে আমাদের দেশের নতুন ভিডিও মার্কেটাররা দ্রুত ইউটিউব থেকে উপার্জন করার জন্য শুধু কোন রকম একটি ভিডিও তৈরি করে এবং সেই ভিডিও দিয়ে ভিডিও মার্কেটিং শুরু করে দেয়। কিন্তু তারা তেমন কোন সফলতা পায় না।
ভিডিও বানানোর ক্ষেত্রে যে সব বিষয় মাথায় রাখা উচিতঃ
~ ভিডিও কি তথ্য প্রদান করছে ।
~ ভিডিও এর কোয়ালিটি যেন খুব ভালো হয় ।
~ ভিডিওটি ভিউয়ার্সরা কি কারণে দেখবে সেই বিষয়টিকে বেশি প্রাধান্য দেয়া ।
২. ব্রান্ডিং করাঃ
একটি ভিডিও দেখে হয়ত অনেকে বলতে পারে “আরে ভিডিওটি তো চমৎকার হয়েছিল”। কিন্তু যদি সে এই ভিডিওটি কার ভিডিও বা কে তৈরি করেছে তা মনে রাখতে না পারে তাহলে বলা যাবে সেই ভিডিও মার্কেটিং ব্যর্থ হয়েছে। সুতরাং যেই ভিডিওই তৈরি করেন আপনাকে লক্ষ্য রাখতে হবে সেখানে যেন সঠিকভাবে ব্রান্ডিং হয়। যাতে ভিউয়ার্সরা দীর্ঘ সময় আপনার ব্র্যান্ড মনে রাখতে পারে। তাহলেই সে এক সময় আপনার ফলোয়ার বা কাস্টমারে পরিনত হবে।
যেমন – সাম্প্রতিক সময়ে Samsung একটি ভিডিও প্রচার করেছে, ভিডিওটি আমি নিজে কয়েকবার দেখেছি এবং আমার অনেক কাছের মানুষদের মেসেজ এ ভিডিওটির লিঙ্ক শেয়ার করেছি, এতে করে Samsung এর ব্রান্ডিং ভালো হচ্ছে। দেখুন আপনাদের সাথেও শেয়ার করলাম, আপনারা আগে না জেনে থাকলে এখন YouTube এ সার্চ করে দেখবেন, আবারও ব্রান্ডিং হলো।
৩. দীর্ঘ ভিডিও তৈরি না করাঃ
একটি পণ্য প্রচারের জন্য বা ব্রান্ডিং এর জন্য যে সকল ভিডিও তৈরি করা হয় তা সাধারণত ছোট ভিডিও হলে ভালো। যাতে কাস্টমার অল্প সময়ের মধ্যে আপনার সম্পর্কে ভালো ধারনা পায়। কিন্তু আপনি যদি লম্বা সময়ের একটি ভিডিও তৈরি করেন তাহলে কাস্টমার বিরক্ত হওয়ার একটি সম্ভবনা থাকে।
তখন অনেকেই ভিডিওটি টেনে টেনে দেখেন, এতে করে আপনার মূল উদ্দেশ্য হাত ছাড়া হয়ে যেতে পারে। আপনি যদি আবার ব্যবসায় ব্যতিত অন্য ভিডিও বানান তখন বড় হতেও পারে কিন্তু ব্যবসায়িক ভিডিও গুলো ৩-৫ মিনিট এর মধ্যে হলে ভালো হয়।
Training is an Investment
In the Future of your Business
Learn Digital Marketing from Moshiur Monty – https://goo.gl/UG3F3h
৪. Call to Action যুক্ত করাঃ
ভিডিও মার্কেটিং এর আরেকটি ব্যর্থতার কারণ হল ভিডিওতে কোন ধরনের Call to Action যুক্ত না করা।আপনি যদি একটি ভিডিও তে Call to Action যুক্ত না করেন তাহলে আপনি আপনার ভিউয়ারসকে মাঝ পথে ছেড়ে দিলেন। তাকে পরবর্তীতে কি করতে হবে বা কিভাবে করতে হবে তার কিছু বললেন না। এর ফলে কাস্টমার আপনার দিকে নাও আসতে পারে।
ধরুন আপনি আপনার নতুন একটি সার্ভিস এর মার্কেটিং এর জন্য ভিডিও বানিয়েছেন, ভিডিওটি এভাবে বানানো হয়েছে যেন আপনি মানুষের চাহিদার যোগান দিচ্ছেন সেই বিষয়টা তুলে ধরেছেন কিন্তু শেষের দিকে এসে বুঝিয়ে দিতে হয় কোন ব্রান্ড এই কাজটি করছে অথবা কিভাবে এই সার্ভিসটি পাওয়া যেতে পারে। আবারও বলতে হয় Samsung এর ভিডিওটির কথা, একবার দেখে নিন ধারণা হয়ে যাবে – https://www.youtube.com/watch?v=779KwjAYTeQ
৫. সফলতার ও বাস্তবতাঃ
প্রায় আমাদের সকলের মাঝেই একটি গুরুত্বপূর্নে জিনিসের অভাব থাকে তা হল ধৈর্যের অভাব। মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে এটি অবশ্যই থাকতে হবে। অনেক ফ্রীলেন্সার যারা ভিডিও মার্কেটিং করে তারা কিছু ভিডিও তৈরি করেই সফলতার প্রত্যাশা করে। দ্রুত সফলতা না পেলে ধৈর্য হারিয়ে ফেলে। মনে করে এই সেক্টরে সে সফলতা পাবে না এবং আর ভিডিও মার্কেটিং এ গুরুত্ব দিতে চায় না।
বা ধরুন আপনি আপনার ব্যবসায় এর জন্য একটি সোস্যাল বিজ্ঞাপন ভিডিও বানালেন এবং আপনি ধারণা করছেন এই ভিডিও ভাইরাল হয়ে যাবে কিন্তু তা নাও হতে পারে হয়ত আপনার পরবর্তী ভিডিও মার্কেটে খুব ভালো প্রভাব ফেলতে পারে, হয়ত প্রথম ভিডিও এর মাধ্যমে মানুষ আপনার ব্রান্ড এর পরিচিতি লাভ করলো কিন্তু তেমন বিক্রয় হলো না এবং পরবর্তী ভিডিও এর মাধ্যমে আপনার ব্রান্ডিং ও বিক্রয় দুটোই হতে পারে ।
আবার বিভিন্ন কোম্পানীও কিছু দিন ভিডিও মার্কেটিং করে কিন্তু প্রতাশ্যিত সাফল্য না পেয়ে বন্ধ করে দেয়। ফলে প্রচুর সময় এবং অর্থ নষ্ট হয়।ভিডিও মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে ধৈর্য হারা হওয়া যাবে না কারণ কখন আপনার ভিডিও জনপ্রিয়তা পাওয়া শুরু করবে তা আপনি জানেন না।
৬. একাধিক বিষয়ের উপর গুরুত্ব না দেয়াঃ
একটি ভিডিওতে সব সময় একটি বিষয়ের উপর গুরুত্ব দেয়া উচিত। আপনি একে টার্গেট মার্কেট ভিডিও ও বলতে পারেন। যে সকল ভিডিও তে শুধু মাত্র একটি বিষয়ের উপর গুরুত্ব দিয়ে ভিডিও তৈরি করা হয় যেমনঃ কোন একটি সমস্যার সমাধান দেওয়া, কোন একটি পণ্যের রিভিউ দেওয়া বা নতুন একটি পণ্য বা সার্ভিস এর মার্কেটিং করা ইত্যাদি তাদের সফলতার সম্ভাবনা বেশি।
৭. পণ্য নাকি ভোক্তাঃ
ভিডিও মার্কেটিং হল পণ্য বা সার্ভিস বিক্রয়ের একটি অন্যতম সহজ মাধ্যম। কিন্তু অনেক মার্কেটার পণ্য ভিডিও তৈরি করতে গিয়ে কাস্টমারের আকাঙ্ক্ষা বা পছন্দের দিকে লক্ষ্য না করে শুধু পণ্যের বা সার্ভিসের দিকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে, সার্ভিসের গুণাবলী বর্ননা করে ভিডিও তৈরি করে। যার ফলে ভিডিও মার্কেটিং ব্যর্থ হয়। প্রথমে আপনাকে জানতে হবে আপনার ভিডিও থেকে কাস্টমার কি জানতে চাচ্ছে। তারপর সেই চাহিদা এর উপর ভিত্তি করে এভাবে ভিডিও বানান যেন তার চাহিদা পূরণ হয় এবং আপনার মার্কেটিংও হয়ে যায় ।
৮. এনালাইটিক ব্যবহার না করাঃ
কিছু কিছু মার্কেটার একটু অলস হয়। তারা মানসম্পন্ন ভিডিও তৈরি করে এবং ভালোভাবে অপ্টিমাইজও করে।কিন্তু লক্ষ্য রাখে না তাদের ভিডিও কে দেখছে, কারা দেখছে, কোন দেশ থেকে ভিউ হচ্ছে বা কতক্ষণই বা ভিউ হচ্ছে। অর্থাৎ এনালাইটিক নিয়ে কোন রকম গুরুত্ব দেওয়া হয় না। তাই তারা ভিডিওর কি অবস্থা নির্ধারন করতে পারে না এবং পরবর্তী কার্যকরী পদক্ষেপও নিতে পারে না ফলে ভিডিও মার্কেটিং ব্যর্থ হয়।
Moshiur Monty
Digital Marketing Trainer, Bdjobs Training.
অনুপ্রেরণা যোগাতে আমার সাথেই থাকুন ~~ https://www.facebook.com/MoshiurMontyBD/
ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কিত বাংলা আর্টিকেল পড়তে ভিজিট করুনঃ
Your email address will not be published. Required fields are marked *